Fire Accidents Will Increase in Winter, Extra Precautions Needed.

4.5/5 - (2 votes)

শীতে বাড়বে অগ্নি দুর্ঘটনা, প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতা

শীতে বাড়বে অগ্নি দুর্ঘটনা, প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতা

আমাদের দেশে শীতের আবির্ভাবের সাথে হাসপাতাল গুলোতে পোড়া রোগীর সংখ্যা উল্লেখ যোগ্য হারে বাড়তে থাকে। শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে বেড়ে চলে অগ্নি দুর্ঘটনা। দেশে সরকারীভাবে পোড়া রোগীদের চিকিৎসার বিশেষায়িত কেন্দ্র হল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গুলোতে প্রতিষ্ঠিত বার্ণ ইউনিট। শীতের সময় এই হাসপাতাল গুলোতে বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে হয় এবং প্রায়ই হাসপাতাল গুলোতে রোগীর স্থান সংকুলান হয় না।

Fire Accidents Will Increase in Winter

শীতে বাড়তি পোড়া রোগীর কারণ (Causes of increased burn patients in winter) :
প্রধানতম কারণ দুর্ঘটনা। শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে এ সময় মানুষ বাড়তি উষ্ণতা পেতে চায়। এর প্রেক্ষিতে গরম পানি ব্যবহার, কিংবা খড় বা শুকনো পাতায় আগুন ধরিয়ে তাপ পোহানো, বা মাটির চুলার আগুন রান্নার পর পুরোপুরি না নিভিয়ে গরম ছাই রেখে সেখানে তাপ পোহানো, বিভিন্ন বস্তু গরম করে স্যাক নেওয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে দুর্ঘটনা ঘটে গিয়ে পুড়ে যেতে পারে। সাধারণত শহুরে পরিবেশের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে যেখানে শীতের তীব্রতা বেশি সেখানে এ ধরনের দুর্ঘটনা বেশি ঘটে থাকে।

Fire Accidents Will Increase in Winter,

Fire Accidents Will Increase in Winter

কারা বেশি আক্রান্ত হন (Who is most affected) :
সব শ্রেনীর মানুষ ই কম বেশি আক্রান্ত হতে পারেন তবে সব চেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় শিশুরা। এ ছাড়া বয়স্ক পুরুষ বা মহিলারা বেশি আক্রান্ত হন। গ্রামাঞ্চলে সদ্য সন্তান জন্মদানকারী প্রসূতি মহিলাদের মধ্যেও আক্রান্তের হার বেশি। শিশুরা আক্রান্ত হয় চঞ্চলতার দরুন, কিংবা তার দেখাশোনা করা ব্যক্তির অসতর্কতার দরুন। বয়স্ক পুরুষ ও মহিলারা এবং প্রসূতি মায়েরা তাপ পোহাতে গিয়ে দুর্ঘটনা বসত কাপড়ে আগুন লেগে আক্রান্ত হন।
Fire Accidents Will Increase in Winter,

কোন ধরনের পোড়ায় আক্রান্ত হবার সম্ভবনা বেশি (Which type of burn is more likely to occur) :
এ সময় সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় স্ক্যাল্ড বা গরম পানি বা অন্যান্য গরম তরল জাতীয় পদার্থের মাধ্যমে পুড়ে যাওয়া রোগী। সাধারণত বাচ্চারা বা মহিলাগন এতে বেশি আক্রান্ত হয়। এ ছাড়া সরাসরি আগুনে পুড়ে যাওয়া বা ফ্লেম বার্ণ, ছাইয়ের মাধ্যমে পোড়া বা এশ বার্ণ আক্রান্তের হারও এ সময় বেশি। কারেন্টে পুড়ে যাওয়া, গরম কোন পদার্থের সংস্পর্শে পুড়ে যাওয়া, কেমিক্যাল বার্ণ সহ অন্যান্য ধরনের পুড়ে যাওয়া রোগীও এ সময় পাওয়া যায়।

প্রাথমিক চিকিতসা (Primary treatment) :
শরীরের কোন স্থানের কাপডে আগুন লাগলে আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করা যাবে না, এতে বাতাসের অক্সিজেনের সংস্পর্শে আগুন আরো দ্রুত ছড়িয়ে পরবে এবং পুড়ে যাওয়ার পরিমান ও বেড়ে যাবে। সেক্ষেত্রে আগুন নেভানোর জন্য মাটিতে শুয়ে পড়ে গড়াগড়ি করা যেতে পারে কিংবা আসে পাশে অন্য কেউ থাকলে মোটা কাপর বা চাদর দিয়ে ঢেকে জাপটে ধরলে দ্রুত আগুন নিভে যাবে। এরপর দ্রুত সময়ের মধ্যে পুড়ে যাওয়া জামা শরীর থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে এবং স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি পুড়ে যাওয়া স্থানে ১৫-২০ মিনিট ঢালতে হবে। কোন ভাবেই আক্রান্ত স্থানে বরফ, ফ্রিজের ঠান্ডা পানি, ডিমের সাদা অংশ, টুথ পেস্ট, চুন ইত্যাদি লাগানো যাবে না।

বয়স্ক ও শিশুদের ক্ষেত্রে পানি ঢালার সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে অতিরিক্ত পানি ঢালার কারণে ঠান্ডা না লেগে যায়। এরপর দ্রুত চাদর বা কম্বল দিয়ে গা ঢেকে দিতে হবে যাতে শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় থাকে। হাতের কাছে এন্টিসেপ্টিক কোন অয়েনমেন্ট থাকলে সেটি পুড়ে যাওয়া স্থানে লাগানো যেতে পারে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। পুড়ে যাওয়ার পরিমান যত ছোটই হোক না কেন অবশ্যই চিকিতসকের পরামর্শ নিতে হবে। সম্ভব হলে বার্ণ ইউনিট আছে এরকম কোন হাসপাতাল বা একজন প্লাস্টিক সার্জনের পরামর্শ নিতে হবে।
Fire Accidents Will Increase in Winter,

প্রতিরোধে করনীয় (What to do to prevent it) :
আমাদের দেশে পোড়া রোগীর চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষিত জনগোষ্ঠী চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। দীর্ঘদিন চিকিৎসার প্রয়োজন হয় বিধায় চিকিৎসার খরচ ও একেবারে কম নয়। কাজেই অগ্নি দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করতে পারলে সেটি সর্বোত্তম। শীতকালে অগ্নি দুর্ঘটনা প্রতিরোধে নিম্নোক্ত কাজ গুলো করা যেতে পারে-

Fire Accidents Will Increase in Winter

১। শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয় বিধায়, শিশুদের আগুন বা উত্তপ্ত জিনিস পত্র থেকে দূরে রাখতে হবে। শিশুদের নিয়ে রান্না ঘরে যাওয়া যাবে না, গরম কিছু রয়েছে এরকম স্থানে তাকে একা রেখে যাওয়া যাবে না
২। চা, কফি পানের সময় শিশুদের সাথে রাখা যাবে না। এসময় অসাবধানতাবসত গরম চা, কফি পড়ে গিয়ে শিশুর শরীর পুড়ে যেতে পারে
৩। দাহ্য কোন পদার্থ, দেয়াশলাই, লাইটার ইত্যাদি শিশুদের নাগালের বাইরে রাখতে হবে
৪। গোসলের জন্য প্রয়োজনীয় গরম পানি সাবধানে পরিবহন করতে হবে। পাতিলে বা ছোট পাত্রে নেয়ার চেয়ে বালতি বা হাতল যুক্ত বড় পাত্রে পরিবহণ অধিক নিরাপদ


৫। মাটির চুলায় রান্নার পর চুলার ছাই ভাল ভাবে পানি দিয়ে নিভিয়ে রাখতে হবে এবং বড় ঢাকনা দিয়ে চুলা ঢেকে দিতে হবে
৬। শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে খোলা স্থানে আগুন জ্বালিয়ে তাপ পোহানো যাবে না, প্রয়োজনে বিকল্প ব্যবস্থা নিতে হবে
৭। কাপড় শুকানোর জন্য চুলার আগুন জ্বালিয়ে রাখা পরিহার করতে হবে
৮। সদ্য সন্তান জন্মদানকারী মায়েদের শীত নিবারনের জন্য আগুন জ্বালিয়ে তাপ পোহানো যাবে না। গরম স্যাক দেয়ার দরকার হলে সাবধানে তাপমত্রা নিশ্চিত হয়ে স্যাক দিতে হবে


৯। গরম কোন জিনিস ধরার জন্য গ্লাভস বা আলাদা কাপড ব্যবহার করতে হবে, খালি হাতে ধরা থেকে বিরত থাকতে হবে
১০। বাসায় সিলিন্ডার, গ্যাসের চুলায় আগুন জ্বালানোর আগে বদ্ধ ঘরের জানালা খুলে দিয়ে কিছুক্ষন অপেক্ষা করতে হবে, নিশ্চিত হতে হবে কোন গ্যাস লিকেজ আছে কিনা
১১। ইলেক্ট্রিক লাইন বছরে অন্তত দুইবার চেক করাতে হবে, এবং রিপেয়ার প্রয়োজন হলে ব্যবস্থা নিতে হবে। অব্যবহৃত সকেট প্লাস্টিক ক্যাপ বা টেপ দিয়ে ঢেকে দেয়া যেতে পারে
১২। সর্বোপরি অগুনে পোড়ার ক্ষতি এবং ভয়াবহতা সম্পর্কে সর্বদা সচেতন থাকতে হবে

Fire Accidents Will Increase in Winter

বার্ণ ইউনিট রয়েছে এমন কিছু হাসপাতাল ও প্লাস্টিক সার্জন পরামর্শের জন্য আপনি নিচে উল্লেখিত হাসপাতালগুলোতে যোগাযোগ করতে পারেন:
হাসপাতাল (বার্ণ ইউনিট সহ) (Hospital – including burn units) :

বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (BMC) – ঢাকায়, যেখানে বার্ণ ইউনিট এবং প্লাস্টিক সার্জন সেবা পাওয়া যায়। বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
এটি ঢাকার ধানমন্ডি এলাকায় অবস্থিত।
House # 2, Road # 7, Dhanmondi, Dhaka-1205, Bangladesh.

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল – বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় সরকারি হাসপাতাল, যেখানে বার্ণ ইউনিট আছে। এটি ঢাকা শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এবং বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো হাসপাতালগুলোর মধ্যে একটি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ঢাকা- ১০০০, বাংলাদেশ।

Code : 1983

এপোলো হসপিটাল ঢাকা – এই হাসপাতালে প্লাস্টিক সার্জন এবং বার্ণ ইউনিট সেবা রয়েছে।
অ্যাপোলো হাসপাতাল ঢাকা ঢাকা জেলায় একটি অন্যতম প্রধান । এটি Plot 81, Block E, Bashundhara R/A, Dhaka, Bangladesh অবস্থিত।

ইউনাইটেড হসপিটাল – ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতাল, যেখানে বার্ণ ইউনিট ও প্লাস্টিক সার্জন সেবা প্রদান করা হয়।
Plot 15, Road 71, Gulshan, Dhaka 1212,

এখানে বিশেষজ্ঞরা বার্ণ চিকিৎসায় সহায়তা করেন।

প্লাস্টিক সার্জন (Plastic surgeon) :
বার্ণ পরবর্তী চিকিৎসার জন্য একজন প্লাস্টিক সার্জনের পরামর্শ নেয়া জরুরি, কারণ প্লাস্টিক সার্জনরা ত্বকের ক্ষত সারানোর জন্য বিশেষজ্ঞ।


আপনার প্রয়োজনের ভিত্তিতে সঠিক চিকিৎসা পেতে এই হাসপাতাল বা চিকিৎসকদের সাথে যোগাযোগ করা উত্তম।

  1. Fire Accidents Will Increase in Winter,

এখানে ক্লিক করুন (আরো বিস্তারিত জানার জন্য-)

Leave a Comment