Ways to Increase Computer Speed.
কম্পিউটারের গতি বাড়ানোর উপায় এর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো হার্ড ডিস্ক ড্রাইভের (HDD) বদলে সলিড স্টেট ড্রাইভ (SSD) ব্যবহার করলে ডাটা অ্যাক্সেসের গতি অনেক বেড়ে যাবে । SSD (সলিড স্টেট ড্রাইভ) বিভিন্ন প্রকারভেদে পাওয়া যায়।
কম্পিউটারের গতি বাড়ানোর উপায় – বর্তমানে বহুল ব্যবহৃত কিছু ডিভাইস

SATA SSD: এটি SATA ইন্টারফেস ব্যবহার করে এবং হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ ড্রাইভের তুলনায় দ্রুত গতি প্রদান করে। যদি আপনার কম্পিউটারটি অনেক পুরনো হয়ে থাকে তাতেও সমস্যা নেই । পুরনো কম্পিউটারের গতি বাড়ানোর উপায় এরমধ্যে এটি অন্যতম । SATA SSD (Solid State Drive) সাধারণত 6 Gb/s (গিগাবিট প্রতি সেকেন্ড) গতিতে ডেটা স্থানান্তর করতে সক্ষম। তবে, বাস্তবে এর গতি প্রায় 500 MB/s (মেগাবাইট প্রতি সেকেন্ড) পর্যন্ত সীমাবদ্ধ হয়, কারণ SATA প্রোটোকলের সীমাবদ্ধতা থাকে। SATA SSD গুলি HDD (Hard Disk Drive) এর তুলনায় অনেক দ্রুত ডেটা অ্যাক্সেস এবং স্থানান্তর করতে পারে, ফলে সিস্টেমের পারফরম্যান্স অনেক উন্নত হয়। সে ক্ষেত্রে সাটা এসএসডি অবশ্যই কোন ভাল ব্র্যান্ডের ব্যবহার করতে হবে ।

NVMe SSD: এটি PCIe ইন্টারফেস ব্যবহার করে, যা SATA-এর তুলনায় অনেক বেশি গতিশীল। এটি সাধারণত উচ্চ-কার্যকরী কম্পিউটিংয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। এই ডিভাইসটি সাধারণত বিভিন্ন প্রকার স্পিডের হয়ে থাকে । বর্তমানে কম্পিউটারের গতি বাড়ানোর উপায় হিসেবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহারিত হয় । NVMe (Non-Volatile Memory Express) হলো একটি উচ্চ-গতি স্টোরেজ প্রোটোকল, যা SSD (Solid State Drive) ড্রাইভের সঙ্গে ব্যবহৃত হয়।
NVMe ড্রাইভগুলি SATA SSD এর তুলনায় অনেক দ্রুত। এর গতি সাধারণত 1000 এমবিপিএস (MB/s) থেকে শুরু করে 7000 এমবিপিএস বা তারও বেশি হতে পারে, যা বিশেষ করে গেমিং, ভিডিও এডিটিং, এবং ডেটা ট্রান্সফারের জন্য উপকারী। NVMe এর গতি মূলত PCIe (Peripheral Component Interconnect Express) বাসের উপর ভিত্তি করে কাজ করে, যা উচ্চ ব্যান্ডউইথ এবং কম লেটেন্সি নিশ্চিত করে। এর ফলে, ডেটা ট্রান্সফার এবং অ্যাপ্লিকেশন লোডিং টাইম ব্যাপকভাবে কমে যায়।
M.2 SSD: এই ধরনের SSD সাধারণত ল্যাপটপ এবং মাদারবোর্ডে M.2 স্লটে বসে। এর ডাটা স্পিড SATA SSD এর মত হয়ে থাকে । সাধারণত 6 Gb/s (গিগাবিট প্রতি সেকেন্ড) গতিতে ডেটা স্থানান্তর করতে সক্ষম। তবে, বাস্তবে এর গতি প্রায় 500 MB/s (মেগাবাইট প্রতি সেকেন্ড) ।

U.2 SSD: এই ধরনের SSD প্রধানত সার্ভার এবং ডেটা সেন্টারে ব্যবহৃত হয় এবং এটি NVMe প্রযুক্তি ব্যবহার করে। U.2 SSD-গুলো উচ্চ গতির স্টোরেজ ডিভাইস যা এনভি.এম.এফআই (NVMe) প্রোটোকল ব্যবহার হয় বলে এগুলোর গতি সাধারণত 2000 MB/s থেকে শুরু হয় এবং কিছু মডেল 7000 MB/s বা তারও বেশি গতিতে পৌঁছাতে পারে। U.2 SSD-গুলোর বিশেষত্ব হলো এগুলো সার্ভার এবং ডেটা সেন্টার ব্যবহারের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, ফলে তারা উচ্চ ব্যান্ডউইথ এবং কম লেটেন্সি প্রদান করে।
PCIe SSD: এটি PCIe স্লটে সংযুক্ত হয় এবং খুব দ্রুত ডেটা ট্রান্সফার স্পিড সরবরাহ করে। PCIe SSD-এর গতি মূলত PCIe (Peripheral Component Interconnect Express) এর সংস্করণ এবং স্লটের সংখ্যা অনুযায়ী নির্ভর করে। সাধারণত, PCIe SSD গুলি SATA SSD-এর তুলনায় অনেক বেশি দ্রুত হয়। PCIe 3.0: প্রতি লেনের জন্য 1 GB/s গতি, সাধারণত 4 লেন ব্যবহার করা হয়, তাই মোট গতি প্রায় 4 GB/s। PCIe 4.0: প্রতি লেনের জন্য 2 GB/s, মোট গতি প্রায় 8 GB/s। PCIe 5.0: প্রতি লেনের জন্য 4 GB/s, মোট গতি প্রায় 16 GB/s।
উপরোক্ত ডিভাইসগুলি দ্রুত গতিতে আপনার ডেটা স্থানান্তর এবং লোডিং সময়ে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য তৈরি করতে পারে। এই ডিভাইসগুলি খুবই কম পাওয়ার কনজিউম করে অর্থাৎ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ।
এখানে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো আপনার কম্পিউটার টিতে যদি হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ (HDD) থাকে সেক্ষেত্রে ডেক্সটপ হলে সেকেন্ডারি স্টোরেজ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে । যদি ল্যাপটপ হয়ে থাকে তবে ল্যাপটপের স্লট অনুযায়ী এইচ ডি ডি (HDD) টি রাখা যাবে অথবা বাদ দিতে হবে । যদি ল্যাপটপে সিডি রম থাকে সেক্ষেত্রে সিডি রম বাদ দিয়ে ক্যাডি (Cady) তে এইচডিডি বসিয়ে সিডি রম (CD ROM) এর জায়গায় স্থাপন করা যাবে ।

এছাড়াও RAM আপগ্রেড করতে হবে যা আপনার কম্পিউটারকে মাল্টি টাস্কিং এর ক্ষেত্রে সহায়তা করবে । ভেন্টিলেশন ও কুলিং সিস্টেম বিষয়টিতে খেয়াল রাখতে হবে । কম্পিউটার অনেক বেশি গরম হয়ে গেলে তার গতি কমে যাবে । হার্ডওয়ার দ্বারা কম্পিউটারের গতি বাড়ানোর উপায় হিসেবে উপরের বিষয়গুলো অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ।
PSU : কম্পিউটারের ভালো মানের পাওয়ার সাপ্লাই (Power Supply Unit বা PSU) একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, কারণ এটি কম্পিউটার সিস্টেমের প্রতিটি অংশকে সঠিক ভোল্টেজ সরবরাহ করে। এটি কম্পিউটারটির সকল অংশকে সঠিক ভোল্টেজ প্রদান করে, যেমন 12V, 5V, 3.3 V ইত্যাদি, যাতে প্রতিটি অংশ কার্যকরীভাবে কাজ করতে পারে। এর মাধ্যমে কম্পিউটারের প্রধান উপাদানগুলি যেমন মাদারবোর্ড, প্রসেসর, গ্রাফিক্স কার্ড, হার্ড ড্রাইভ, ফ্যান ইত্যাদি সঠিকভাবে কাজ করতে পারে। সঠিক পাওয়ার সাপ্লাই সিস্টেমের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত বৈদ্যুতিক সমস্যা থেকে রক্ষা করে। এটি সিস্টেমের স্থায়িত্ব বাড়ায় এবং কম্পিউটারটি দীর্ঘ সময় ধরে ভালোভাবে কাজ করতে সহায়ক হয়।
UPS : কম্পিউটার ব্যবহারে UPS (Uninterruptible Power Supply) একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি কম্পিউটার এবং অন্যান্য ডিজিটাল ডিভাইসকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করে। যখন বিদ্যুৎ চলে যায় UPS তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাটারি পাওয়ার দিয়ে কম্পিউটার চালু রাখে, যার ফলে তথ্যের ক্ষতি বা হার্ডওয়্যার নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। বৈদ্যুতিক সঙ্কটের সময় কম্পিউটার বন্ধ হয়ে গেলে গুরুত্বপূর্ণ ডেটা হারানোর ঝুঁকি থাকে, বিশেষ করে যদি কাজ চলতে থাকে । UPS এই সমস্যা প্রতিরোধ করে এবং ব্যবহারকারীকে নিরাপদে সিস্টেম বন্ধ করার সুযোগ দেয়। এছাড়াও, UPS কম্পিউটারের পাওয়ার সার্কিটকে স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে, যা হার্ডওয়্যারকে সুরক্ষিত রাখে এবং সিস্টেমের আয়ু বাড়ায়। কম্পিউটার ইলিগেল ভাবে বন্ধ হলে কম্পিউটারের সিস্টেম ফাইল ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে । কম্পিউটারের গতি বাড়ানোর উপায় এর মধ্যে এই দুইটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিতে হবে ।
সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে কম্পিউটারের গতি বাড়ানোর উপায়
প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ব্যবহার কম্পিউটারের গতি বাড়ানোর উপায় এর মধ্যে অন্যতম । অপ্রয়োজনীয় ফাইল এবং প্রোগ্রাম মুছে ফেলা এবং ডিস্ক ক্লিনআপ করা। এগুলো ছাড়াও নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট এবং সিস্টেম ক্লিনিং করুন যা আপনার কম্পিউটারকে দ্রুত গতি কাজ করতে সহায়তা করবে। কম্পিউটারের যে ড্রাইভে অপারেটিং সিস্টেম সেটাপ করে থাকে সেই ড্রাইভ টিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা রাখুন ।
যে সকল সফটওয়্যার আপনার অপ্রয়োজনীয় অর্থাৎ আপনার কোনো কাজে আসবে না সে সকল সফটওয়্যার ইনস্টল করা থেকে বিরত থাকুন ।কম্পিউটার চালু করার সময় যে প্রোগ্রামগুলি স্বয়ংক্রিয়ভাবে খোলে অর্থাৎ (Startup App) যেগুলি অপ্রয়োজনীয় তা ডিজেবল করে দিন । অপ্রয়োজনীয় ফাইল (Temp, Prefetch) ইত্যাদি মুছে এবং ডিস্ক ক্লিনআপ টুল ব্যবহার করুন। মনে রাখতে হবে HDD এর ক্ষেত্রে, ডিফ্রাগমেন্টেশন করে ডাটা পুনর্বিন্যাস করুন। SSD এর জন্য ডিফ্রাগমেন্টেশন প্রয়োজন হয় না।
অনলাইনে থাকা অবস্থায় সফটওয়্যার ও অ্যাপ্লিকেশন আপডেট করুন, কারণ নতুন আপডেটগুলি সাধারণত কম্পিউটারের গতি বাড়ানোর উপায় গুলুর মধ্যে অন্যতম ।ভালো মানের সিস্টেম সিকিউরিটি সফটওয়্যার (এন্টিভাইরাস) ব্যবহার করুন যা ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার থেকে আপনার কম্পিউটারকে মুক্ত রাখবে । ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার আপনার সিস্টেমের গতি কমাতে পারে, তাই নিয়মিত স্ক্যান করুন। কিছু সফটওয়্যার সেটিংস পরিবর্তন করুন যা আপনার কম্পিউটারকে দ্রুতগতিতে কাজ করতে সহায়তা করবে ।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কম্পিউটারের গতি বাড়ানোর উপায় এরমধ্যে রাখা অন্যতম
ল্যাপটপ বা কম্পিউটার কে পরিষ্কার রাখতে হবে কারণ ধুলা এবং ময়লা কম্পিউটারের ভেতরের যন্ত্রাংশের উপর জমে যেতে পারে, এই ধুলা বালির কারণে হার্ডওয়্যারকে গরম হয়ে যাবে। এই গরম হওয়া কারণে কম্পিউটারের পারফরম্যান্স কমে যাবে এবং যন্ত্রাংশের ক্ষতি করতে পারে। ল্যাপটপ বা কম্পিউটার স্লো হওয়ার আরেকটি কারণ হতে পারে অপরিষ্কার রাখা । আপনার ল্যাপটপ, কম্পিউটারে কখনোই ধুলাবালি জমতে দেওয়া উচিত নয় । সবসময় এটিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ভাবে রাখা উচিত । অনেক সময় ধুলোবালি জমে থাকলে ল্যাপটপ ও কম্পিউটার স্লো কাজ করে ।
অবশ্যই নিয়মিত রেম প্রসেসর গ্রাফিক্সকার্ড এগুলো পরিষ্কার রাখা উচিত কারণ এগুলোর উপর আপনি যখন কাজ করে থাকেন তখন অধিক চাপ পড়ে । কীবোর্ড এবং পোর্টে জমে থাকা ময়লা এবং ধুলো ব্লক সৃষ্টি করতে পারে, যা ডিভাইসের সঠিক কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে। নিয়মিত সফট ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করুন সম্ভব হলে ব্লোয়ার দিয়ে বাতাস দিয়ে ধুলাবালি পরিষ্কার করুন । এই বিষয়গুলি আপনার কম্পিউটারের গতি বাড়ানোর উপায় এরমধ্যে অন্যতম ভূমিকা রাখবে ।
কম্পিউটারে হার্ডওয়্যার আপগ্রেড করার ক্ষেত্রে একজন এক্সপার্টের সহযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক্সপার্ট জানেন কোন হার্ডওয়্যার আপনার চাহিদা ও বাজেট অনুযায়ী সবচেয়ে উপযুক্ত। হার্ডওয়্যার ইনস্টলেশনের সময় কোন সমস্যা হলে, একজন এক্সপার্ট দ্রুত সমস্যা শনাক্ত ও সমাধান করতে পারেন। সঠিকভাবে ইনস্টল না করলে যন্ত্রণা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যদি আপনি নিজে করতে চান, তবে ভিডিও টিউটোরিয়াল বা গাইড অনুসরণ করতে পারেন, কিন্তু নিরাপত্তার জন্য একজন এক্সপার্টের সাহায্য নেওয়া সবসময় ভালো।
“কম্পিউটারের গতি বাড়ানোর উপায়” আরো বিস্তারিত জানার জন্য- এখানে ক্লিক করুন